নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ : ৩০

মানসী সিনহা পরিচালকের আসনে। কেমন ছবি উপহার দিতে চলেছেন?

কৌতূহল ছিল সবার। তাঁর অভিনয়ের অনুরাগীদের, টলিউডেরও। ছবির ট্রেলার মুক্তি পেতেই বিস্মিত অনেকেই। প্রথম ছবি ‘এটা আমাদের গল্প’য় নব্য পরিচালক বয়সের ভারে যাঁরা বাতিলের দলে তাঁদের ভালবাসার কথা শুনিয়েছেন! ভালবাসার গল্পই যদি বলবেন তা হলে টাটকা প্রেমের গল্প নয় কেন? প্রশ্ন টলিপাড়ার। একই প্রশ্ন আজকাল ডট ইনেরও। কী বলছেন মানসী? তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সামগ্রিক ভাবে ধরে নিই, একটা বয়সের পরে আর ভালবাসা পেতে নেই বা আসতে নেই। এগুলো আমরাই ঠিক করে দিই। আদতে এতে জীবন আটকে যায়। কারও জীবন, কারও চাওয়াপাওয়া কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। হৃদয় দিয়ে এটা অনুভব করার পরেই ছবিতে ধরার কথা ভেবেছি। এটা আমার বিশ্বাস।’’



ছবিতে দুই ‘প্রবীণ নাগরিক’ শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য। তাঁদের নতুন করে ভালবাসার টানে ভেসে যাওয়া নিয়েই গল্প। এমন গল্প কি বাস্তবে দেখেছেন মানসী? নব্য পরিচালকের দাবি, এরকম ঘটনা আকছার ঘটছে। কোনও পুরুষ ৪০ বছরে বিপত্নীক। সমাজের নিয়ম মেনে, স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা দেখাতে গিয়ে আর বিয়েই করেন না তিনি। কিংবা একজন নারী। তিনি একই বয়সে বিধবা হলে আর কারও দিকে চোখ তুলে তাকাতেই পারেন না! এটা কেন হবে? ভালবাসার কোনও বয়স নেই। নতুন সংসারের স্বপ্ন দেখারও সময়সীমা নেই। ‘এটা আমাদের গল্প’ ছবি সমাজকে সেই বার্তা দেবে।

ছবিজুড়ে আরও চমক। এই প্রথম মানসীর হাত ধরে জুটি বাঁধলেন শাশ্বত-অপরাজিতা। পরিচালকের কথায়, ‘‘জানতাম, ওদের নিলে নিজেদের উজাড় করে দেবে। তা বলে এত ভাল করবে, সেটাও স্বপ্ন। ফলে, ওদের দেখতে দেখতে মন তৃপ্তিতে ভরে যেত। নিজের বিবেচনারও তারিফ করতাম।’’ সেখান থেকেই ফাঁস, মানসী শাশ্বতকে ছবিতে প্রথমে অতিথি চরিত্রে ভেবেছিলেন। কারণ, কম বাজেট এবং জাতীয় স্তরে অভিনেতার নিয়মিত অভিনয়। বন্ধুকে নিজের প্রথম পরিচালনায় অভিনয় অনুরোধ জানাতেই গল্প শুনতে চেয়েছিলেন বড়পর্দার ‘ঋত্বিক ঘটক’। গল্প শুনে তাঁর প্রথম কথা, তাঁকে কেন নায়কের চরিত্রে নেওয়া হচ্ছে না? তিনি ওই চরিত্রটিই করবেন! এভাবেই ছবিতে সোহাগ সেন, খরাজ মুখোপাধ্যায়, দেবদূত ঘোষ, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, তারিন জাহান, আর্য দাশগুপ্ত প্রমুখ। চিত্রনাট্যে দেবপ্রতীম দাশগুপ্ত। ক্যামেরায় অম্লান সাহা। সম্পাদনায়, অনির্বাণ মাইতি। প্রযোজনায় সুভাষ বেরা-শুভঙ্কর মিত্র। নিবেদনে ধাগা প্রোডাকশন।



মানসীকে পরিচালনার দুনিয়ায় এনেছেন তাঁর মা। যখনই ছোটগল্প মনে আসত তিনি মাকে শোনাতেন। তিনি ভালমন্দ মতামত জানাতেন। ‘এটা আমাদের গল্প’র গল্প শুনে তাঁর মা জানিয়েছিলেন, এটা ছবি বানানোর মতো। এবং মানসী যেন ছবি পরিচালনা করেন। মায়ের সেই স্বপ্নপূরণ করতেই মানসী ক্যামেরার পিছনে। কেমন লাগল পরিচালনা করে? লাজুক হাসির সঙ্গে জবাব, ‘‘প্রথম প্রথম অ্যাকশন আর কাট বলতে পারতাম না! সবাই বন্ধু তো, সহকর্মী। অনেকে বয়সে বড়। কী করে তাঁদের ওভাবে বলি? ব্যাপারটা বুঝতে পেরে একদিন সোহাগদি ডেকে কড়া ধমক দিলেন। জানালেন, আমি এখন পরিচালক। সবার উপরে। সেই আচরণটাই সবাই আমার থেকে চাইছেন।’’